Tuesday 28 March 2017

ভাববার বিষয়
































ভাববার বিষয় 

ভাবনা কেন আসে মনে,
ভাবনা কেন আসে?
আসেও যদি, কেন প্রাণে
আগুন দিয়ে হাসে?
হৃদয় জুড়ে নেশা এমন,
নেশায় করে ভয়-
ভাবনা কেন আসে সখী,
যেটা পাবার নয়... 


               ---পল্লব 

যা তা

যা তা

ক্লান্ত রাত, বিষণ্ণ সকাল,
ক্ষুধার্ত মন, খাদ্যের আকাল;
ভেজা কাপে চুমুক, তিতকুরি চায়ে;
বহু দিনের ময়লা, লেগে আছে গায়ে-
শুকিয়ে যাওয়া কুমড়ো ফুল আর,
শিশির ভেজা পাতা...
মনের কোণে জল জমেছে!
লিখছি তাই যা তা...

                - পল্লব 

রাত্রি সব জানে

























রাত্রি সব জানে 


জেগে আছে রাত আমার সাথে,

আজ তাই তোর ছুটি-
করবো আজ গল্প অনেক,
খেলবো কাটাকুটি!
বুঝিস না তুই, তোকে ছাড়াও
বেঁচে থাকা যায়-
আজ রাতে মোর সঙ্গী হবার,
রাত্রি নিলো দায়...
বলবো ওকে যা আছে সব,
মনের গহীন কোণে-
কাল দুপুরে লিখবো দেখিস,
রাত্রি সব জানে...

                -পল্লব (২৯.০২.২০১২) 

নাম না জানা





























নাম না জানা... 


পা রেখেছো কার ঘরে?
মন রেখেছো কই? 
ভালোবাসার ছাদে যাবে?
কোথায় পাবে মই?
হাত রেখেছো কলিং বেল এ?
বেল বাজালে কার?
খুঁজছ যাকে মনে মনে,
নাম জানো কি তার?

-------------পল্লব

Monday 27 March 2017

বর্ষা




















বর্ষা

জলের উপর বৃষ্টি পড়ে ?
নাকি পাতার উপর ?
হতে পারে কোনটাই না !
হতে পারে শব্দ পড়ে ,
খাতার উপর !
হতে পারে মনে পড়ে কাউকে তখন -
হতে পারে কবিতা সে , 
হতে পারে কবি ,
হতে পারে যা খুশী তাই -
বল তুমি যদি !

                 -পল্লব 

বৃথা

বৃথা 

এই রাত, কখনো একা...
ওই চাঁদ, কখনো বাঁকা...
যদি আমি ভাবি, তুমি আছো পাশে -
মিটি মিটি তারা, চুপি চুপি হাসে -
তবে কি তোমায়, বৃথা পিছু ডাকা ???

------------------------পল্লব 

তুই

তুই


"তুই" মানে এক পশলা বৃষ্টি...
"তুই" মানে ভীরু চোখের দৃষ্টি...
"তুই" মানে স্বপ্ন দেখার ঘুম...
আর মেঘের মাঝে চাঁদ এর খেলায় -
রাত্রি নিঝঝুম... ...

                   -পল্লব 

রাজার রাজা

রাজার রাজা

অনেক কিছু পাওয়ার মাঝে না পাওয়া টাই থাকে মনে, 
পাওয়ার সুখ যায় হারিয়ে ছোট্ট সে না পাওয়ার দুখে, 
তবু যদি ভালোবাসো, নিজেরে সবার আগে -
"আমিও পারি" বলতে পারো, নতুন আশা জাগে। 
আমি শুনি, তুমি শোন, যে যা কিছুই শুনুক, 
ছন্দে বাজে তালে বাজে সে সুর আবার ফুটুক ।
চাওয়া-পাওয়ার হিসেব নিকেশ থাকুক তোলা আজ,
খুঁজে দ্যাখো পাশেই আছি, ছেড়ে রাজার সাজ ...

- পল্লব ৬.৫.১৪

দ্রৌপদী

দ্রৌপদী

আমি দুশ্চরিত্র দুঃশাসন -
আমি বার বার করি বস্ত্রহরণ।
চির অসহায় তুমি দ্রৌপদী,
যুগ যুগ ধরে রক্তের নদী;
বয়েছে তোমার চুলের ধারায়-
তবু তুমি আজও সম অসহায়!
তুমি ভাবো আমি চির অশালীন,
আমি বুঝি করি কুরুকে মলিন।
জানো তো না তুমি সভার মাঝারে
যে তোমার রাখে লাজ,
সে শালীন-ই মোরে নীরবে লুকায়ে
শেখায় এহেন কাজ!
তাই তুমি হবে সদা লাঞ্ছিত,
যুগ যুগ ধরে এই বাঞ্ছিত;
কেউ হবে জয়ী, কারো পরাজয়,
তোমাকে ঘিরেই রক্তক্ষয়।

আজও তুমি আছো সেই পাঞ্চালী,
আজও চারিদিকে হও তুমি বলি,
মুখ বুজে তবু করেছো সহ্য,
বিধাতা তোমায় রচেছে দাহ্য।
আর নয় তবে হও আগুয়ান,
আর হবে না তো তুমি ম্রিয়মাণ,
হানো বিদ্রোহ, করো আয়োজন-
বাঁচাতে লাজ, যা যা প্রয়োজন-
ধ্বংস করো যত অপসংস্কার,
খুলে ফেলো আছে যত অলংকার!
তোলো অস্ত্র, করে দাও সোজা,
নারীতন্ত্রের জয়ধ্বজা... 


                          পল্লব ৩.৭.১৪ 

Sunday 26 March 2017

না জানা কথা

না জানা কথা

শুরুটা যে কি ছিল  - জানিনা...
শেষটাই বা কি হবে  - জানিনা...
চোখে অন্ধত্বের চশমা রেখে...
বয়ে যাব; শুরু থেকে শেষ অবধি ।
রেখে যাব না কোন অস্তিত্বের ছাপ ।
বৃথা এই জীবন টা পাবেনা স্থান
ইতিহাসের কোন পাতায়...
শুধু চলমান সময়ের হাত ধরে,
ভেসে যাব গড্ডালিকায় ।
আশেপাশের মানুষগুলো হয়তো
কখনো ঠেলে ফেলে দেবে
গভীর কোন খাদের নির্জনতায় !
আবার কেউ বা হয়তো
বাড়িয়ে দেবে হাত ,
টেনে তুলবে খাদ থেকে
সভ্যতার কৃত্রিম পথে ...
দৈনন্দিন গণ্ডীর ঘেরাটোপে
বন্দী হয়ে হয়তো কেটে যাবে
সারাটা জীবন, ভয়াবহ,
যন্ত্রনাতুর, মুক্তির পথ চেয়ে ...
সাধ এবং সাধ্যের সাদা খাতায়
জটিল হিসেব কষে কষে
ভুলে যাব একদিন
সব যোগবিয়োগের খেলা !
সকালের স্বচ্ছ শিশির কনা হয়ে
তারপর ... লেগে থাকব
শিউলির সবুজ পাতায় ।
হয়তো সেটাই শেষ ...
জানিনা - শুরুটা যে কি ছিল ,
আর শেষটাই বা কি হবে  -
জানিনা...
              -পল্লব ০৮.১২.২০১৪ 

পরকীয়া

পরকীয়া

আগুন আছে তোর ভেতরেও
শরীর তাতে জ্বলছে,
উড়ছে ধুলো মনের ভেতর,
স্মৃতির পারদ গলছে ।
শরীর মনের জলছবিতে
কে দিয়েছে রঙ ?
দাম তো আমায় দিতেই হবে
সাজতে হবে সঙ !
কাজল লতার কালি হয়ে
থাকবি আমার চোখে ,
মুখ পুড়িয়ে বুক পুড়িয়ে
থাকবি প্রেম সুখে ।
হোক কালো বা হোক সে লাল
মন-আকাশের মেঘলা ,
তোর মনে দাবানল
আরআমার মন একলা ......

                      - পল্লব 

হঠাৎ কখন








হঠাৎ কখন

জানিনা কখন বিকেল হল,
মেঘের আঁচড় লাগল চোখে...
জানিনা কখন বৃষ্টি এলো,
সন্ধেটা ঠিক নামার আগে...
রঙের প্রলেপ গাছের পাতায়,
রঙ জমেছে আকাশ কোণে...
জানিনা কখন তোর কথা আজ,
পড়লো আবার আমার মনে...
- পল্লব ২৪.৩.১৭

জানি জানিনা

































জানি জানিনা
জানিনা কোথায় যেতে চাই ফিরে...
কোন স্বপনের শান্তির নীড়ে...
আজ তুমি আছো, কাল নেই আমি...
জানিনা কে ঠিক কতটাই দামী...
জানি শুনছি না, জানি বুঝছি না...
ভালবাসাবাসি আর সইছি না...
তবু ফিরে আসে, জানি ভালোবাসে...
রাত্রির মুখ জানি দেখে হাসে...
স্পর্ধা আমার, সততা আমার...
জানি সে সময় হয়েছে যাবার...
কত কাছে থেকে, কত যে দূরে...
কোন স্বপনের শান্তির নীড়ে...
-pallab (11.02.2013)

বিরহ

বিরহ


কেমন আছিস আমায় ছেড়ে?
কেমন আছিস অনেক দূরে?
চলছে কেমন জীবন চাকা?
মনের কোণটা লাগছে? ফাঁকা?
আচ্ছা এখনো বায়না করিস?
আগের মতো দুচোখ ভরিস?
গাইতে পারিস? সেই চেনা গান?
সেই চেনা সুর, মান-অভিমান...
মনের কথার ডাইরি লেখা!
দুঃখ হলে বৃষ্টি দেখা!
জানিস আজও আমার ঘরে,
মুষল ধারে বৃষ্টি পড়ে!
সেদিন যেদিন চলে গেলি-
পথ আলাদা বলতে এলি...
সেদিন থেকে মেঘ করেছে,
উপচে দুচোখ জল ঝরেছে...
আজ, আমার ঘরে কেউ আসেনা,
লেখার পাশে কেউ বসেনা!
তবুও আমি ভালো আছি...
স্বপ্ন নিয়ে জীবন বাঁচি...

                          -পল্লব 

স্বপ্ন আসে কই?























স্বপ্ন আসে কই?

সবাই যখন ঘুমিয়ে পড়ে,
অচেতনে ঘুমের ঘোরে,
সবার কাছেই স্বপ্ন আসে-
আমার আসে কই?

ঘুম আসে রাতপরীর বেশে,
বালিশ চাদর শরীর মেশে!
ঘুমিয়ে পড়ি তার পরশে-
নয়তো জেগে রই...

সবার কাছেই স্বপ্ন আসে-
আমার আসে কই?

স্বপ্নে নাকি সব ছোঁয়া যায়!
যা খুশি তাই, যা প্রাণে চায়!
অলীক যত কল্পনা প্রায়-
নেই কোন হৈ চৈ ...

সবার কাছেই স্বপ্ন আসে-
আমার আসে কই?

বিফলতার আগল ঠেলে,
সফলতার শিখর ফেলে,
কল্পনা্র-ই ডানা মেলে-
শূন্যে মেলা মই!

সবার কাছেই স্বপ্ন আসে-
আমার আসে কই?
সবার কাছেই স্বপ্ন আসে-
আমার আসে কই?
-পল্লব ১৭.১১.২০১৬

রূপ




























রূপ

কত রূপ দেখিলাম তোমারি প্রতিবিম্বে ;
কত আলো আঁধারের মরীচিকা 
তোমারি একই অঙ্গে ।
সেই শুরু থেকে তব পরশ মাখি ,
আসিলাম এই বসন্ত প্রভাতে
হাতে হাত রাখি -
কখনো গরলসম অমৃত কুম্ভে ;
আমরণ নিমজ্জিত রহিয়া
তোমারি গর্ভে -
খুঁজিয়াছি পথ অনন্তের খোঁজে ;
জল মাটি হাওয়ার মতো
পৃথিবীর ভাঁজে ।
হয়তো শেষ নাই তোমার ,
হয়তো আশা নাই আর আমারও

তোমাকে খোঁজার...  


                                    - pallab (08.03.2015)

Thursday 23 March 2017

খোলস





















খোলস 

কাঁটাওয়ালা দেওয়ালের ধার ঘেঁষে,
অবিকল গুল্ম-লতার মতো সাপের খোলস-
রোজনামচার বদলানো কাপড়ের রঙ
যেন হারিয়েছে নিজের জৌলুশ।
মস্তিষ্কের বন্ধ কুঠুরিতে জমে থাকা জঞ্জাল,
দেওয়ালের ধারালো ধারগুলোতে লেগে
উঠে আসে ঠাণ্ডা শরীর থেকে!
যন্ত্রণায় থাকে সারা রাত জেগে...

কাঁটাওয়ালা দেওয়ালের ধার ঘেঁষে,
আমিও থাকি এই পারে তার-
নিত্যদিনের খস খস শব্দে
ঘুম ভেঙ্গে আমি জেগে উঠি বার বার...

                                    -পল্লব ০৫.১২.২০১৩




              ব্লগ যখন লিখব ভাবলাম, তখন যেটা যেটুকু পারি সেটা নিয়েই লেখা সমীচীন মনে করলাম। আর প্রথম কবিতা নির্বাচিত করলাম এটাকেই। কারণ এটাই আমার প্রথম কবিতা যেটা পত্রভারতী এবং কবিতা ক্লাব এর যৌথ উদ্যোগে তাদের ষষ্ঠ বইতে স্থান পেয়েছে। 

             মনে হল কবিতাটা সম্পর্কেও কিছু বলা দরকার। কবিতাটা আসলে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটা অঙ্গ । আমরা প্রতিনিয়ত সমাজ এবং সামাজিকতার চাপে নানা রকম মুখোশ ধারণ করি। যে মুখোশ আমাদের পথ চলাকে সহজ করে দেয়। আমরা বিভিন্ন লোকের কাছে বিভিন্ন রূপে ধরা দিয়ে থাকি, যেখানে যেমন প্রয়োজন হয় আর কি। কিন্তু দিনের শেষে কোন একটা সময় আমরা সেই মুখোশ ছেড়ে বেরিয়ে একটু একা হতে চাই; যেটা আমার মনে হয় খুব কষ্টকর একটা পরিবর্তন। আসলে আমি কি (বা আমরা কি) আর কি হয়ে থাকতে চাই তার দোটানায় সবাই এবং আমিও ঘুমহীন রাত অতিবাহিত করি সারা জীবন ধরে।  এটাই এই কবিতার মুল বিষয়বস্তু।

           ভাল লাগলে সঙ্গে থাকবেন, ফিরে আসব আবার অন্য লেখা নিয়ে।